ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
টাকার পাহাড় গড়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা: সেলিমা রহমান ভারতে থাকার বৈধ মেয়াদ শেষ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’ কি সত্যিই হবে পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না জাতিসংঘ অধিবেশন নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ড. ইউনূসের বৈশ্বিক-আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জরুরি: বাইডেন ইলিশের দাম কমছে না কেন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন

কৃষিজমিতে যাতায়াতের রাস্তায় ৩২ লাখ টাকার ব্রিজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০
  • ১৬০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিলে চাষাবাদ করতে যাওয়ার জন্য কৃষকদের ব্যবহৃত একটি সরু রাস্তার ওপর ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করায় হতবাক এলাকাবাসী। এ অবস্থায় নির্মিত ব্রিজটির দুই পাশে সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় কৃষকদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। অভিযোগ রয়েছে, প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা না করেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার কারণে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে ব্রিজটি ওই এলাকার কৃষকদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের আপুয়ারখাতা সোত্তার ভিটা এলাকায় একটি সরু রাস্তায় জনৈক আশরাফের জমির ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ৩৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৬ টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান লুৎফর রহমান বকসী নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যা চলতি বছরের জুনে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু নির্মাণের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় ওই পথে যাতায়াত করা কৃষকরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাস্তায় ব্রিজের অভাবে মানুষ চলাচল করতে পারছে না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে শুধুমাত্র কৃষকদের বিলে চাষাবাদ করতে যাতায়াতের জন্য একটি গুরুত্বহীন সরু রাস্তায় কেন এত বড় ব্রিজ নির্মাণ করল তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এই পথে যোগাযোগের কোনো রাস্তা না থাকায় লাখ-লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি কোনো কাজে আসছে না। ফলে সরকারের বিপুলপরিমাণ অর্থ ভেস্তে গেছে।

স্থানীয় আশরাফ আলী বলেন, ওই জায়গায় ছোট একটা গর্ত ছিল, সেখানে একটি কালভার্ট দিলেই হতো। এখানে এত বড় ব্রিজ নিমার্ণ করে সরকারের লাখ-লাখ টাকা কেন ব্যয় করা হলো, তা দেখে আমরা হতবাক। ব্রিটিশ আমল থেকে এলাকার কৃষকরা বিলে যাওয়ার জন্য রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছে। ব্রিজ থেকে প্রায় ১ হাজার ফুট দূরে গিয়ে রাস্তাটি শেষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, কোনো পথচারীও চলাচল করে না।

পান্ডুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মঙ্গা বলেন, রাস্তাটি রেকর্ডভুক্ত, ওই রাস্তা দিয়ে কৃষকরা তাদের জমিতে ধান কাটা মাড়াই ও চাষাবাদের জন্য যায়। বিলে যেতে তাদের যেন সমস্যা না হয় সেজন্য ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লুৎফর রহমান বকসী বলেন, বর্ষাকাল শেষ হলে সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে। যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানে ব্রিজ হয়, আর যেখানে প্রয়োজন, সেখানে ব্রিজ হয় না। তবে বিষয়গুলো দেখভাল করে পিআইও, এখানে আমাদের কিছু নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বলেন, ব্রিজটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের হলেও বাস্তবায়ন হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে। বন্যা শেষ হলে মাটি কাটা হবে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আব্দুর কাদের বলেন, বিষয়টি দেখব আমরা, সেখানে ব্রিজ নির্মাণে যুক্তিযুক্ত আছে কি-না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

টাকার পাহাড় গড়েছেন সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা

কৃষিজমিতে যাতায়াতের রাস্তায় ৩২ লাখ টাকার ব্রিজ

আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিলে চাষাবাদ করতে যাওয়ার জন্য কৃষকদের ব্যবহৃত একটি সরু রাস্তার ওপর ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করায় হতবাক এলাকাবাসী। এ অবস্থায় নির্মিত ব্রিজটির দুই পাশে সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় কৃষকদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। অভিযোগ রয়েছে, প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা না করেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার কারণে ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে ব্রিজটি ওই এলাকার কৃষকদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের আপুয়ারখাতা সোত্তার ভিটা এলাকায় একটি সরু রাস্তায় জনৈক আশরাফের জমির ওপর ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ৩৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এ ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৬ টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান লুৎফর রহমান বকসী নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যা চলতি বছরের জুনে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু নির্মাণের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় ওই পথে যাতায়াত করা কৃষকরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাস্তায় ব্রিজের অভাবে মানুষ চলাচল করতে পারছে না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে শুধুমাত্র কৃষকদের বিলে চাষাবাদ করতে যাতায়াতের জন্য একটি গুরুত্বহীন সরু রাস্তায় কেন এত বড় ব্রিজ নির্মাণ করল তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। এই পথে যোগাযোগের কোনো রাস্তা না থাকায় লাখ-লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি কোনো কাজে আসছে না। ফলে সরকারের বিপুলপরিমাণ অর্থ ভেস্তে গেছে।

স্থানীয় আশরাফ আলী বলেন, ওই জায়গায় ছোট একটা গর্ত ছিল, সেখানে একটি কালভার্ট দিলেই হতো। এখানে এত বড় ব্রিজ নিমার্ণ করে সরকারের লাখ-লাখ টাকা কেন ব্যয় করা হলো, তা দেখে আমরা হতবাক। ব্রিটিশ আমল থেকে এলাকার কৃষকরা বিলে যাওয়ার জন্য রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছে। ব্রিজ থেকে প্রায় ১ হাজার ফুট দূরে গিয়ে রাস্তাটি শেষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, কোনো পথচারীও চলাচল করে না।

পান্ডুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মঙ্গা বলেন, রাস্তাটি রেকর্ডভুক্ত, ওই রাস্তা দিয়ে কৃষকরা তাদের জমিতে ধান কাটা মাড়াই ও চাষাবাদের জন্য যায়। বিলে যেতে তাদের যেন সমস্যা না হয় সেজন্য ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লুৎফর রহমান বকসী বলেন, বর্ষাকাল শেষ হলে সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে। যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানে ব্রিজ হয়, আর যেখানে প্রয়োজন, সেখানে ব্রিজ হয় না। তবে বিষয়গুলো দেখভাল করে পিআইও, এখানে আমাদের কিছু নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বলেন, ব্রিজটি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের হলেও বাস্তবায়ন হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরে। বন্যা শেষ হলে মাটি কাটা হবে। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আব্দুর কাদের বলেন, বিষয়টি দেখব আমরা, সেখানে ব্রিজ নির্মাণে যুক্তিযুক্ত আছে কি-না।